“সালাত” আল্লাহ রব্বুল আলামীনের সাথে সম্বন্ধযুক্ত করা আবশ্যক
“সালাত” আল্লাহ রব্বুল আলামীনের সাথে সম্বন্ধযুক্ত করা আবশ্যক
সাহাবায়ে
কেরাম রাদি. নবীয়ে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লামের নিকট সালাত-এর
হুকুম তামিল করার পদ্ধতি জিজ্ঞাসা করলে, তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লাম
শিখালেন- “তোমরা আমার জন্য আল্লাহ তায়ালার নিকট সালাত প্রার্থনা কর। সালাতের দোয়া কর।”
এ শিক্ষা প্রমাণ করে, সালাতের হুকুম পুরা হওয়ার জন্য শর্ত হল, পাঠকারী সালাতকে আল্লাহ
রব্বুল আলামীনের সাথে সম্বন্ধযুক্ত করতে হবে। সম্পৃক্ত করতে হবে।
এই
হুকুম আদায়ের জন্য “আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদ” এটুকু বলা যথেষ্ট। এটুকু যথেষ্ট
হওয়ার বিষয়ে হাদিসের সকল বর্ণনা ঐকমত্য। তবে “আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদ” বাক্যটির
অন্তর্গত ‘সাল্লি’ শব্দটি আদেশসূচক ক্রিয়াপদ যা এ বাক্যে দোয়ার অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।
তাই বলে হুকুম আদায়ের জন্য এই দোয়ার অর্থে ব্যবহৃত আদেশসূচক ক্রিয়াপদ ব্যবহার আবশ্যক
নয়; বরং এই মূল ধাতু থেকে নির্গত অতীতসূচক বা অন্যান্য শব্দ দ্বারাও দুরুদ পড়া জায়েজ
আছে এবং হুকুম আদায়ের জন্যও তা যথেষ্ট।
এ
কারণেই মাসআলা হল, যে ওলামায়ে কেরামের নিকট নামাজে দুরুদ পড়া ওয়াজিব- তাদের ভাষ্যমতে
এই ওয়াজিব আদায়ের জন্য “আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদ”-এর ন্যায় “সাল্লাল্লাহু
আলা মুহাম্মাদ” বলাও যথেষ্ট। কিন্তু “আসসালাতু আলা রাসূলিল্লাহ” বাক্য দ্বারা সালাতের
হুকুম আদায় হবে না। কেননা এ বাক্যে ‘সালাত’-এর সম্বন্ধ আল্লাহ তায়ালার সাথে করা হয়
নাই। আল্লামা নিশাপুরী রহ. বলতেন, “সাল্লাইতু আলা মুহাম্মাদ” পড়া যথেষ্ট না। কেননা
বান্দার তো এ সামর্থ্যই নাই যে, সে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লামের
ওপর ‘সালাত’ পাঠাবে। বান্দার কর্তব্য হল, সে আল্লাহ তায়ালার নিকট দোয়া করবে-দরখাস্ত
পেশ করবে তিনি যেন রসূলের ওপর ‘সালাত নাযিল’ করেন।
সারকথা,
সালাত বা দুরুদ নাযিল করার বা পাঠানোর মালিক-অধিকারী একমাত্র আল্লাহ তায়ালা। আমরা কথাবার্তায়
যে বলে থাকি, অমুকে দুরুদ পড়ে/ অমুকে দুরুদ পাঠায়- এ জাতীয় বাক্যসমূহ আমরা রূপক অর্থে
ব্যবহার করি। বাক্যগুলোর উদ্দেশ্য হল ব্যক্তি সালাত নাযিলের জন্য/ দুরুদ পাঠানোর জন্য
আল্লাহ তায়ালার নিকট দরখাস্ত পেশ করে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন