দুটি সূক্ষ্ম বিষয়

আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর দুরুদ প্রেরণ করুন।
 اللهم صل على سيدنا محمد وعلى ال سيدنا محمد 
দুরুদ শরীফ বিষয়ক দুটি অতি অতি সূক্ষ্ম বিষয় বুঝে নিন।
১. আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর সালাত প্রেরণের হুকুম দিয়েছেন, বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হুকুম হিসেবে। উর্দু ও বাংলা ভাষায় ‘সালাত’-এর অনুবাদে ‘দুরুদ’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়। এটা অনুবাদের স্বার্থে ব্যবহৃত একটি শব্দমাত্র। আরবি ‘সালাত’ শব্দে যে ব্যাপকতা রয়েছে, সালাতের অর্থে যে গভীরতা, যে অন্তর্নিহিত ভাব- তা ‘দুরুদ’ শব্দে নেই। ‘দুরুদ’ শব্দ দ্বারা ‘সালাত’ শব্দের যথার্থ হক আদায় সম্ভব নয়। সুতরাং কেউ যদি বলেন, ‘হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর লাখো দুরুদ, কোটি কোটি দুরূদ।’ এ বাক্য দ্বারা তথা ‘দুরুদ’ শব্দ ব্যবহার দ্বারা সালাতের যে হুকুম আল্লাহ তা‘আলা দিয়েছেন তা আদায় হবে না। বরং উক্ত হুকুম আদায় হতে হলে ‘সালাত’ শব্দ থাকতে হবে। যেমন:- اللهم صل على محمد আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদ। অথবা صلى الله على النبي الامي সাল্লাল্লাহু আলান নাবীয়্যিল উম্মী। এ জাতীয় বাক্য হতে হবে।
২. ‘সালাত’ শব্দের অনুবাদে ‘রহমত’ শব্দটিও ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এ শব্দটিও ‘সালাত’ শব্দের মর্ম ধারণে অক্ষম। কেউ যদি সারাদিন এভাবে দোয়া করে, ‘হে আল্লাহ নবী কারীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর ওপর রহমত বর্ষণ করুন।’ এ দোয়ার মাধ্যমে সে ‘সালাত’পাঠকারী হিসেবে গণ্য হবে না। কেননা সালাতের আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পূর্বেই সাহাবায়ে কেরাম রাদিয়াল্লাহু আনহুম السلام عليك ايها النبي ورحمة الله وبركاته আসসালামু আলাইকা আইউহান নাবীয়্যূ ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু এভাবে সালাম শিখেছিলেন। অতঃপর যখন সালাতের আয়াত অবতীর্ণ হল সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞাসা করলেন, ‘কাইফা নুসাল্লি আলাইকা?’ আমরা আপনার ওপর সালাত প্রেরণ করব কী উপায়ে? সাহাবায়ে কেরাম রাদিয়াল্লাহু আনহুমের এরূপ জিজ্ঞাসা প্রমাণ করে, ‘সালাত’ শব্দের মধ্যে যে বিশেষ রহমত ও রহমতের ভাণ্ডার নিহিত তা ‘রহমত’ শব্দে অনুপস্থিত। ‘রহমত’ শব্দ দ্বারা ‘সালাত’ শব্দের মর্ম-ব্যাপকতা-অর্থের বিশালতা-বোধের গভীরতা আদায় করা সম্ভব নয়। কোরআনুল কারীমে নির্দেশিত দুরুদ শরীফ পাঠের হুকুম তখনই আদায় হবে যখন অতীত, বর্তমান-ভবিষ্যৎ বা আদেশসূচক যে কোনরূপ ক্রিয়াপদ বা কারক হিসেবে সরাসরি ‘সালাত’ শব্দের উপস্থিতি বর্তমান হবে।
[সতর্কতা : শ্রদ্ধেয় লেখক মহোদয় ‘‍দুরুদ’ বা ‘রহমত’ শব্দ দ্বারা দোয়া করলে তা কোন কাজেই আসবে না, পণ্ডশ্রম হবে- এমন কথা বলেননি। তিনি শুধু বলেছেন, এ জাতীয় অন্যান্য শব্দ দ্বারা কোরআনুল কারীমে নির্দেশিত সালাতের হক আদায় হবে না। প্রয়োজনে বক্তব্য দুটি বারবার পাঠ করুন। চিন্তা করুন। বুঝুন। অপব্যাখ্যা থেকে দূরে থাকুন। আল্লাহ তা‘আলাই সকল নেক কাজের তাওফিকদাতা। -অনুবাদক]

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

“সকাল বেলার ধনীরে তুই ফকির সন্ধ্যা বেলা”

দুরুদে সালাত শব্দ থাকা আবশ্যক সালামে থাকবে س ل م

দুটি রহস্যান্মোচন