“তাসলিমান”
“তাসলিমান”
সুরা আহযাবের
৫৬ নং আয়াতে সালাম শব্দের সাথে তাসলিমা শব্দ উল্লেখ রয়েছে। تسليما “তাসলিমা” শব্দটি আরবি বাক্যবিশ্লেষণ
বিধি মোতাবেক মাসদার-ক্রিয়ামূল। বাক্যে পূর্বোক্ত ক্রিয়াপদের অর্থটিতে আরো তাকিদ-গুরুত্বারোপকরণের
লক্ষ্যে ব্যবহৃত।
প্রশ্ন: সূরা আহযাবের ৫৬ নম্বর আয়াতে সালামের হুকুমের সাথে তাসলিমা শব্দ দ্বারা {গুরুত্বারোপকরণের লক্ষ্যে ব্যবহৃত ক্রিয়ামূল} তাকিদ আনা হয়েছে। আদেশবাচক ক্রিয়া {সালাম পাঠাও}-র অর্থে করা হয়েছে কিন্তু একই আয়াতে “সালাত পাঠ করো/ দুরুদ পাঠাও” এই আদেশবাচক ক্রিয়াপদটির সাথে তাকিদ/ গুরুত্বারোপের জন্য কোন শব্দ ব্যবহার করা হয় নাই- এর কারণ কী?
উত্তর:
আলাদা কোন শব্দ ব্যবহার করা ব্যতীতই কয়েকভাবে তাকিদ সৃষ্টি হয়ে গিয়েছে।
ক.
আল্লাহ তায়ালা প্রথমে তাঁর নিজের আমল উল্লেখ করেছেন যে, আমি “সালাত” প্রেরণ করি।
খ.
নিজের পর ফেরেশতাগণের আমল উল্লেখ করেছেন যে, ফেরেশতারা সালাত প্রেরণ করে।
গ.
ফেরেশতাগণের উল্লেখ করতে গিয়ে বহুবচন শব্দ ব্যবহার করেছেন- যার অর্থ হয় সকল ফেরেশতাই এ আমল করেন।
ঘ.
সালাতের আদেশটি সালামের পূর্বে দিয়েছেন।
সালাতের সাথে এই চার প্রকারে ভাবগত তাকিদ বিদ্যমান রয়েছে যা সালামের সাথে নেই। তাই ক্রিয়ামূল উল্লেখের মাধ্যমে সালামের হুকুমটি গুরুত্বপূর্ণ করা হয়েছে। যেন এই চারপ্রকার ভাবগত তাকিদের বিপরীতে কোন তাকিদ না থাকার কারণে, সালাম আবশ্যক কিছু নয়; এই ভ্রান্তি সৃষ্টি না হয়।
তবে কতক ওলামায়ে কেরাম ভিন্ন ব্যাখ্যা করেছেন- বাক্যে শাব্দিক তাকিদ তথা গুরুত্বারোপের
জন্য ব্যবহৃত ক্রিয়ামূল উহ্য রয়েছে। এ ব্যাখ্যা মতে পূর্ণ বাক্য ছিল صلوا عليه تصلية و سلموا عليه تسليما-
অতঃপর প্রথম অংশ থেকে تصلية ক্রিয়ামূল এবং দ্বিতীয় অংশ থেকে “عليه”
অব্যয় ও সর্বনাম উহ্য করে আয়াত নাজিল হয়েছে।
আরবি ভাষার অলংকারশাস্ত্রমতে, বাক্যের অপর অংশ দ্বারা অনুমেয় শব্দ উহ্য রাখা বাগ্মিতার একটি অনন্য উদাহরণ।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন