সালাম-এর বিধান
সালাম-এর বিধান
অধিকাংশ আলেমের মতে সালামের হুকুম ও বিধান উপর্যুক্ত প্যারায় [পূর্বের
পোস্টে প্রকাশিত] বর্ণিত সালাতের
বিধানের ন্যায়। সুতরাং কোনো নামপুরুষ ব্যক্তির ক্ষেত্রে তার নামোল্লেখপূর্বক عَلَيْهِ السَّلَامُ আলাইহিস্ সালাম বলা; অথবা আম্বিয়া আলাইহিমুস্ সালাস ব্যতীত কারো নামে
আলাইহিস্ সালাম বলা বৈধ হবে
না। বলা যাবে না। তবে মধ্যমপুরুষকে السلام عليكَ - السَّلَامُ عَلَيْكُمْ - سَلَامٌ عَلَيْكُم : "আস্স্সালামু আলাইকা বা আসসালামু আলাইকুম বা সালামুন আলাইকুম"
বলা জায়েজ। প্রশ্ন দেখা দেয়- নামাজে “আস্সালামু আলাইনা ওয়া ‘আলা ইবাদিল্লাহিস্ সালেহীন”
যখন বলি, এতে উভয় শর্তই লঙ্ঘিত হয়। অর্থাৎ ‘আলাইনা’ বলার
কারণে উত্তমপুরুষবাচক সর্বনাম থাকায় মধ্যমপুরুষের শর্ত এবং ‘ইবাদিল্লাহিস সালিহীন’ বলার মাধ্যমে আম্বিয়া ব্যতীত
অন্যদের উদ্দেশ্য না করার শর্ত উভয়টাই লঙ্ঘিত হল। এর উত্তরে বলব, এটা একটা বিশেষ স্থান অর্থাৎ শুধু নামাজে প্রযোজ্য।
তাছাড়া ইবাদিল্লাহ (আল্লাহর বান্দাগণ)
শব্দটি সরসরি আসেনি বরং ‘আলাইনা’ সর্বনামের অধীন হয়ে এসেছে। অতএব অধীন হিসেবে উম্মত
যুক্ত থাকা অনুমোদিত- সেই মতের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল।
সালামের আবার দুটি উদ্দেশ্য। একটি হচ্ছে কারো সাথে সাক্ষাতে আমরা যে সালাম দিয়ে
থাকি অভিবাদন হিসেবে। অথবা কবর জিয়ারতে গিয়ে আমরা
যে সালাস দেই। এটা সালামের একপ্রকার। এই অভিবাদনমূলক
সালামের উত্তর প্রদান করা ওয়াজিবে
কেফায়া। এই সালাম যে কোনে মধ্যমপুরুষের উদ্দেশ্যে তথা উপস্থিত ব্যক্তিকে যেমন দেওয়া
যায় আবার নামপুরুষ-অনুপস্থিত ব্যক্তির উদ্দেশ্যেও লিখনী বা কারো মারফত পাঠানো যায়।
সালামের আরেকটি প্রকার হল, “আল্লাহ তায়ালা তার ওপর ‘সালাম’ নাজিল করুন” খাস
এই দোয়া হিসেবে সালাতের অনুরূপ সালাম। এই সালাম হুজুর আকদাস সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লাম ও অন্যান্য আম্বিয়া
আলাইহিমুস্ সালামগণের সাথে নির্ধারিত।
তাঁরা ব্যতীত অন্যদের উদ্দেশ্যে অধীন বা অনুগামী হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে সরাসরি
ব্যবহার করা যাবে না। অর্থাৎ এই দ্বিতীয় অর্থে ‘আলাইহিস্ সালাম’ও
‘আলাইহিস্ সালাত’-এর মতো বিশেষ মর্যাদার প্রতীক। নিছক দোয়া নহে। তাই
এই বিশেষ মর্যাদার প্রতীকরূপে আম্বিয়া ব্যতীত সরাসরি কোনো উম্মতের উদ্দেশ্যে বলা যাবে
না।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন