হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য “রহমত” বলে দোয়া করা

 হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য “রহমত” বলে দোয়া করা

ر  ح م ক্রিয়ামূল থেকে তৈরি দোয়ামূলক বাক্য যেমন:-

اللهم ارحمه

رحمة اللهِ عَلَيْهِ

عَلَيْهِ الرحمة

ইত্যাদি নবীয়ে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লামের জন্য দোয়া হিসেবে ব্যবহারের বিধান সম্বন্ধে আহলে ইলম ওলামায়ে কেরাম থেকে একাধিক মত পাওয়া যায়।

আল্লামা ইবনে আবদুল বার রহ. রহমত শব্দ থেকে তৈরি বাক্যাবলি দ্বারা নবীয়ে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়ালিহি ওয়াসাল্লামের জন্য দোয়া করা বৈধ মনে করেন না। তার এই বক্তব্যের সাথে অনেকভাবে দ্বিমত পোষণ করা যায়।

যেমন: () তাশাহুদে “রহমতশব্দ দ্বারা দোয়ার উল্লেখ রয়েছে।

السلام عليك ايها النبي ورحمة الله وبركاتة

(খ) এক গ্রামীণ সাহাবী এভাবে দোয়া করেছিলেন, محمدا اللهم ارحمنى و  সাহাবীর দোয়া শুনে নবীয়ে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লাম কোনো প্রকার নিষেধ বা মন্তব্য না করায় মৌনসম্মতি প্রদানপূর্বক এ বাক্যটিও হাদিস দ্বারা প্রমাণিত।

(গ) নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লামের নিজের কতক দোয়াও বিষয়টিকে প্রমাণ করে।

اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ رَحْمَةً مِّنْ عِنْدِكَ اللَّهُمَّ أَرْجُو رَحْمَتَكَ يَاحَى يَا قَيُّومُ  بِرَحْمَتِكَ اَسْتَغِيتُ

এ ব্যাপারে সঠিক কথা হল, শুধু “রহমত” শব্দ দ্বারা দোয়া করা অনুচিত। তবে প্রথমে সালাত ও সালাম থাকলে তার সাথে “রহমত” বৃদ্ধি করায় কোনো অসুবিধা নেই। সালাত শব্দের ভিধানিক অর্থ যদিও রহমতই; তবে “সালাত” শব্দে এক বিশেষ সম্মানও বিদ্যমান, যা রহমত শব্দে নেই। তাছাড়া সালাত শব্দের আভিধানিক অর্থ যদিও রহমত- তবে এ রহমত দ্বারা এমন এক বিশেষ প্রকারের রহমত বোঝানো হয় যার ঊর্ধ্বে রহমতের আর কোনো প্রকার নেই। এবং এ প্রকারটি একমাত্র নবীয়ে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়ালিহি ওয়াসাল্লামের জন্যই নির্দিষ্ট।

গ্রামীণ সাহাবী যে দোয়া করেছিলেন, তার উত্তরে বলা যায়- এ অনুমতি শুধু ঐ সাহাবীর জন্যই ছিল। অন্য কারো জন্য তা প্রযোজ্য নয়। সাধারণ সকলের জন্য প্রযোজ্য হুকুম হল প্রথমেই “রহমতশব্দ ব্যবহার করে দোয়া করা তথা দুরুদ পাঠ করা যাবে না। অথবা শুধু রহমত শব্দ দ্বারাও দোয়া করা যাবে না। সালাত বা সালাম শব্দ দ্বারা প্রথমে দুরুদ পাঠ শুরু করতে হবে। এরপর রহমত শব্দ ব্যবহার করতে কোনো আপত্তি নেই।

পূর্ণ আলোচনার সারাংশ হল, অন্য মুসলমানদের জন্য যেরূপ দোয়া করা হয়- নবীজীর জন্য এরূপে দোয়া করা যাবে না। বরং নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়ালিহি ওয়াসাল্লামের জন্য দোয়া করতে হবে বিশেষ- সম্মানজনক বাক্যে, বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত উপায়ে।

যেমনটি আল্লাহ রব্বুল আলামীন ইরশাদ করেছেন-

ْ بَعْضًا لا تَجْعَلُوا دُعَاءَ الرَّسُوْلِ بَيْنَكُمْ كَدُعَاءِ بَعْضِكُم

ফেরেশতাগণের  জন্য রহমত শব্দ দ্বারা দোয়ার বিস্তারিত বিধান উপরে বর্ণিত নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লামের শানে বর্ণিত বিধানের হুবহু অনুরূপ হবে।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

“সকাল বেলার ধনীরে তুই ফকির সন্ধ্যা বেলা”

দুরুদে সালাত শব্দ থাকা আবশ্যক সালামে থাকবে س ل م

দুটি রহস্যান্মোচন