ফরজে আইন

আল্লাহ তা‘আলা হযরত আকায়ে মাদানী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উম্মতকে সকল নেয়ামত অন্যান্য উম্মতের চেয়ে উত্তমটা দান করেছেন। সবচেয়ে উত্তম নবী। সবচেয়ে উত্তম কিতাব। সবচেয়ে উত্তম শরীয়ত। সবচেয়ে উত্তম সময়-যুগ। সবচেয়ে উত্তম আমল। হযরত আকায়ে মাদানী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রয়েছে উম্মতের প্রতি অপরিসীম মহব্বত-ভালোবাসা-অনুগ্রহ। তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মতের জন্য এমন সব কাজ করেছেন, যা পৃথিবীতে অন্য কেউ কারো জন্য করতে সক্ষম নয়। পরকালেও সক্ষম নয়। এমনকি তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মতের আনন্দ-বেদনা, হাসি-কান্নাকে নিজের আনন্দ-বেদনা, হাসি-কান্নায় পরিণত করেছেন। উম্মতের সুখ-দুঃখ, উচ্ছ্বাস-যাতনাকে নিজের সুখ-দুঃখ, উচ্ছ্বাস-যাতনা হিসেবে বরণ করে নিয়েছেন। এরচেয়েও বড় বিষয় হলো, কেয়ামতের কঠিন ময়দানে হুজুরে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম امتي امتي উম্মতী! উম্মতী!! হায় আজ আমার উম্মতের কী হবে! আজ আমার উম্মতের কী হবে!! করতে থাকবেন। আল্লাহর প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যদি উম্মতী উম্মতী করে ক্লান্ত না হন তাহলে আমি কেন اللهم صل على سيدنا محمد আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা সাইয়্যিদিনা মুহাম্মাদ- বলতে বলতে ক্লান্ত হয়ে যাই?
আসল কারণ হলো, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর সালাত ও সালাম পাঠ যে কত বড় মর্যাদাধিকারী; সে বিষয়টাই আমরা অনুভব করতে শিখি নাই। সালাত ও সালামের অবস্থানটা বুঝতে চেষ্টা করি নাই। সালাত ও সালামের উচ্চতার কল্পনা করি নাই। কল্পনা করতে শিখি নাই। দুর্ভাগ্য! বড়ই দুর্ভাগ্য! আমাদের দুর্ভাগ্যের কথা আর কি বলবো, কতক তো আছেন যারা- সালাত ও সালামকে ইবাদতই মনে করেন না। করলেও সামান্য নফল মনে করেন, ভাবেন কিছু সওয়াব হয়তো হবে আর কি। বাস্তবতা হলো, আকায়ে মাদানী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর দুরুদ ও সালাম পাঠ করা সর্বোত্তম ইবাদত। স্বর্বোন্নত আনুগত্য প্রকাশ।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নৈকট্য লাভের নিমিত্তে সালাত ও সালাম অতি উত্তম মাধ্যম। صلاة وسلام على النبي হুজুর আকদাস সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি দরুদ ও সালাম পাঠানো প্রত্যেক মুসলমানের ওপর ফরজে আইন- একথা ইজমা দ্বারা প্রতিষ্ঠিত বলে দাবি করেছেন আল্লামা আলুসি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি। কোরআনুল কারীমে [সূরা আহযাব ৫৬] আদেশবাচক ক্রিয়াপদ দ্বারা যে হুকুম দেওয়া হয়েছে তা আদেশবাচকই; ভিন্নার্থে নয়। প্রত্যেক মুসলমান জীবনে অন্তত একবার হলেও উক্ত আয়াতের ওপর আমল করা অবশ্য কর্তব্য-ফরজে আইন।

মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

“সকাল বেলার ধনীরে তুই ফকির সন্ধ্যা বেলা”

দুরুদে সালাত শব্দ থাকা আবশ্যক সালামে থাকবে س ل م

দুটি রহস্যান্মোচন