ঈমান বৃদ্ধিকারী কয়েকটি তত্ত্ব-১
ঈমান বৃদ্ধিকারী কয়েকটি তত্ত্ব-১
اِنَّ اللّٰهَ وَ مَلٰٓئِکَتَهٗ یُصَلُّوۡنَ
عَلَی النَّبِیِّ ؕ یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا صَلُّوۡا عَلَیۡهِ وَ
سَلِّمُوۡا تَسۡلِیۡمًا
অর্থ: নিশ্চয়ই
আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতাগণ নবীর ওপর দুরুদ পাঠায়। হে ঈমানদারগণ! তোমরাও তাঁর ওপর দুরুদ ও সালাম পাঠাও। [সুরা আহযাব: ৫৬]
১. পূর্ব আয়াতের সাথে বিষয়-সম্বন্ধ
পূর্ববর্তী আয়াতে হুজুর আকদাস সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লামের যেই অনন্য সম্মানের আলোচনা করা হয়েছে বক্ষ্যমান আয়াতে সেই অনন্য সম্মানের কারণ বর্ণনা করা হয়েছে। তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লামের অনন্য সম্মানের কারণ হচ্ছে আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর ফেরেশতাগণ নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লামের ওপর “সালাত” পাঠান। এক বর্ণনায় রয়েছে আয়াতটি একটি উহ্য প্রশ্নের উত্তর। প্রশ্নটি হল, তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লামের এই অনন্য সম্মানের হেতু কী? আলোচ্য আয়াতে এ প্রশ্নের উত্তর বিদ্যমান।
২.
ধারাবাহিকতা ও
নতুনত্বের অভিনব
মিশ্রণ
ওলামায়ে কেরাম বিষয়টি সহজে বুঝবেন। আয়াতটি জুমলায়ে ইসমিয়্যাহ যা সর্বদাসূচক ও বারংবার হওয়াকে দাবি করে। আবার শেষাংশ হিসেবে জুমলায়ে ফেয়েলিয়্যাহ যা প্রতিবার নতুন করে বিষয়টির বাস্তবায়ন বোঝায়। অতএব আয়াতের বাক্য-গাঁথুনি প্রমাণ করে হুজুর আকদাস সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লামের ওপর “সালাত” সারাক্ষণ অবতীর্ণ হতেই থাকে। আবার এরই মধ্যে সময় সময় নতুনত্বও সৃষ্টি হতে থাকে।
৩. নামের পরিবর্তে “النبي” আনা হয়েছে
এই আয়াতে মোবারকায় তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লামের নাম নেওয়া হয় নাই। নামের বিকল্প “النبي-আননাবিউয়্যু” শব্দ দ্বারা তাঁর উল্লেখের মাধ্যমে সম্মান মর্যাদা ও মর্তবার সুউচ্চ স্থানের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। “النبي”
শব্দে বিদ্যমান الف لام এর
মাধ্যমে ইঙ্গিত হচ্ছে, তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লাম নবুওয়াতের জগতে তথা নবীগণের মধ্যে এতটাই সুপরিচিত ও সুবিদিত যে যখনই نبي শব্দটি
الف لام تعريف যোগে (নবী
থেকে আননাবী হয়ে) ব্যবহার হবে তখন আর কেউ নন তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লামের মহান পবিত্র সত্তাই উদ্দিষ্ট হবেন।
“আননাবিউয়্যু” ব্যবহারে ভিন্ন আরেকটি সূক্ষ্ম ইঙ্গিত রয়েছে। তিনি যেমন নবী তেমন রসুলও। ওলামায়ে কেরামের সুপ্রতিষ্ঠিত মত হল, রিসালাত নবুওয়াতের চেয়ে উত্তম। কিন্তু এ আয়াতে “আররসুল” না বলে “আননাবীই” বলা দ্বারা ইঙ্গিত- নবী হিসেবেই যদি তিনি সালাত ও সালামের এমন মহান অধিকারী হন, তাহলে রসুল হিসেবে তাঁর পাওনা কত অধিক হবে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন