নববী জবানে দুরুদের ফাজায়েল ০২

নববী জবানে দুরুদের ফাজায়েল ০২

লাঞ্ছিত হবে

রসুলুল্লাহু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লাম বলেন,   ব্যক্তির নাক মাটিতে ঘষা হোক; যার নিকট আমার আলোচনা হল; অথচ সে আমার প্রতি দুরুদ শরীফ প্রেরণ করল না ব্যক্তির নাক মাটিতে ঘষা হোক; যার জীবনে রমজান মাস এল এবং সে ক্ষমা পাওয়া ব্যতীতই মাসটি অতিবাহিত হয়ে গেল। ব্যক্তির নাক মাটিতে ঘষা হোক; যার সামনে তার পিতা-মাতা বৃদ্ধ বয়সে উপনীত হল অথচ তারা (সে সদ্ব্যবহার-খেদমত না করার কারণে) তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাতে পারল না

[হজরত আবু হোরায়রা রাদি./ সুনানে তিরমিযি হাদিস নং-৩৫৪৫/ দারুল  ‍কুতুব আল ইলমিয়্যাহ, বৈরুত।]

"নাক মাটিতে ঘষা হোক।" বাক্যটি নেতিবাচক বা অভিশাপমূলক বাক্য। ব্যক্তির প্রতি আল্লাহ তায়ালার লা‘নত বর্ষিত হওয়ার বদ দোয়া হিসেবে ব্যবহৃত। স্বাভাবিক অর্থ সে অপদস্ত-অপমানিত-লাঞ্ছিত হোক।

মস্ত কৃপণ

রসুলুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, মস্ত কৃপণ ঐ ব্যক্তি যার সামনে আমার আলোচনা করা হল; অথচ সে আমার প্রতি দুরুদ প্রেরণ করল না।

[সাইয়্যিদুনা হজরত হোসাইন রাদি./ সুনানুত্ তিরমিযি হাদিসনং-৩৫৪৬/ দারুল কুতুব আলইলমিয়্যাহ, বৈরুত।]

সবচেয়ে কৃপণ

হজরত আবু জর গিফারী রাদি. বলেন, একদা আমি হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লামের খেদমতে উপস্থিত হলাম। তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি কি তোমাদেরকে লোকেদের মধ্যে সবচেয়ে কৃপণ লোকটির পরিচয় বলব না? সাহাবায়ে কেরাম রাদি. আরজ করল, অবশ্যই ইয়া রসুলাল্লাহ! হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লাম ফরমাইলেন, যে লোকের সামনে আমার আলোচনা করা হল; অথচ সে আমার প্রতি দুরুদ প্রেরণ করল না সে লোক সবচেয়ে বেশি কৃপণ। সর্বাধিক বখিল।

[সহিহুত তারগিব ওয়াত্ তারহিব হাদিস নং ১৬৮৪/ মাকতাবাতুল মাআরেফ, রিয়াদ।]

জান্নাতের রাস্তা বিস্মৃত হল

রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তির সামনে আমার আলোচনা হল; অথচ সে আমার ওপর দুরুদ পাঠ করতে ভুলে গেল; সে যেন জান্নাতের রাস্তা বিস্মৃত হল- ভুলে গেল।

[সাইয়্যিদুনা হুসাইন রাদি./ আলমু‘জামুল কাবির হাদিস নং ২৮৮৭/ মাকতাবা ইবনে তাইমিয়া, কায়রো।]

জান্নাতের রাস্তা ভুলে গেল

রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যে আমার ওপর দুরুদ পাঠে গাফিলতি করল সে যেন জান্নাতের রাস্তা ভুলে গেল।

[ইবনে আব্বাস রাদি./ ইবনে মাজাহ হাদিস নং-৯০৮/ দারুল কুতুব আলইলমিয়্যাহ বৈরুত।]

 

·         উপর্যুক্ত পাঁচটি হাদিসের চারটিতেই নবীয়ে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লামের আলোচনা আসলে দুরুদ না পড়ার ভয়াবহতা উল্লেখ হয়েছে। আমাদের মাজহাবের ওলামায়ে কেরামের সম্মিলিত ফতোয়া হল, যে কোন মজলিসে বারবার নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লামের নাম আসলে একবার দুরুদ পাঠ করা ওয়াজিব। প্রতিবার বা বারবার পড়া মুস্তাহাব। তবে হানাফী ইমামগণের মধ্যে ইমাম তাহাবী রহ.-এর মত হল, প্রতিবার পড়াই ওয়াজিব। অধম এক আশেক আলেমের নিকট বিষয়টির এমন এক ব্যাখ্যা শুনেছি- অবাক তাকিয়ে থাকা ব্যতীত মুখে আর কিছু বলতে পারছিলাম না।

তিনি বলেন, মাজহাবী ফায়সালা হিসেবে প্রতিবার না পড়লে কোনো গোনাহ হবে না ঠিকই; তবে ইমাম তাহাবী রহ.-এর মতটিও বাতিল নয়। কেউ প্রতিবার পড়লে প্রতিবারই সে ওয়াজিব আদায়ের সাওয়াব পাবে, দ্বিতীয়বার থেকে মুস্তাহাবের নয়। 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

মস্ত চিঠির ক্ষুদ্র পত্র

“সকাল বেলার ধনীরে তুই ফকির সন্ধ্যা বেলা”

নববী জবানে দুরুদের ফাজায়েল ০১