মালফুজাত ০৬

০১. গাফলত
আরে গাফেল! কত জানাজায় শরিক হলে, কত লাশ কবরে রাখলে তারপরও মৃত্যুর স্মরণ থেকে গাফেল হও কীভাবে
০২. ঈমানের স্বাদ
তুমি কি এমন ভেবেছো, কোন একদিন তোমার "খাহেশাতে নফসানী" মরে যাবে আর তুমি গুনাহ ছেড়ে দিবে? নফসের প্রবল চাপ যদি আল্লাহ পাকের ভয়ে উপেক্ষা করতে পারো তবেই না ঈমানের স্বাদ অনুভব হবে। 
০৩. সময় থাকতে
মৃত্যু উপস্থিত হওয়ার পর, কোনো প্রকার সংশোধন ও নেক আমলের সুযোগ থাকবে না; সময় থাকতে আখেরাতের সম্বল সংগ্রহ করুন। 
০৪. দুনিয়ার হাকিকত
আজ যেই দুনিয়া তোমাকে হাসাচ্ছে, কাল তা ভীষণ কান্নার কারণ হওয়ার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। 
০৫. দারিদ্র্যে স্বাদ
যে ব্যক্তি  আল্লাহ পাকের প্রেমিক, তার কাছে দারিদ্র্যের তিক্ততা মিষ্টি হয়ে দেখা দেয়। তাই পার্থিব দারিদ্র্য তার সাথে লেগে থাকে এবং সে তা নিয়েই তুষ্ট ও তৃপ্ত। দারিদ্র্যে স্বাদ পাওয়ার সৌভাগ্য সে অর্জন করেছে। দারিদ্র্যেই সে স্বচ্ছলতা ও স্বাচ্ছন্দ্য ভোগ করে।
০৬. জীবন-মরণ
মরার আগেই দুনিয়ার ব্যাপারে তোমাকে মরে যেতে হবে এবং শুধুমাত্র আল্লাহ পাকের ব্যাপারে বেঁচে থাকতে হবে।
০৭. আত্মার প্রশান্তি
"নিশ্চয়ই জিকিরের মধ্যে আত্মার প্রশান্তি রয়েছে।" তুমি যদি না পাও, বুঝে নাও জিকিরের সঠিক পদ্ধতি তোমার জানা নাই। জিকির শিখ এবং জিকির করতে থাকো, জীবনে অশান্তি বলে কিছু থাকবে না।
০৮. আসমানী হাদিয়া
"আল্লাহপ্রেমিকের জন্য বাহ্যিক বিপদাপদ আর নবীপ্রেমিকের জন্য দরিদ্রতা আসমানী হাদিয়া।"
মাশুকের হাদিয়া যখন আসে নাবালেকদের বুঝতে না দিয়ে তা গ্রহণ করতে হয়।
০৯. সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য
যে প্রেমিক আল্লাহ পাকের পরিচয় লাভ করেছে, আত্মিক চোখে রব্বুল আলামিনের কার্যপরিচালনা দেখতে শিখেছে- সে লাভ ক্ষতি, ভালো মন্দ যা কিছু আসে এতে দুনিয়ার কোন ব্যক্তি বা বস্তুর প্রশংসা বা নিন্দা করে না। ব্যক্তিকে শুকরিয়া জানানোর সময় তার অন্তরে থাকে বস্তুত সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য। 
১০. দীনী বয়ানের রুহানী শক্তি
প্রতিটি দীনী বয়ানে বক্তার ইখলাস ও লিল্লাহিয়াত এবং শ্রোতাদের আমলের আগ্রহ অনুপাতে একটি রুহানী শক্তি থাকে। অডিও রেকর্ডের কারণে শক্তি খর্ব হয়। আর যদি প্রকাশ্যে ভিডিও রেকর্ড হয়, রুহানী শক্তি নিঃশেষ হয়ে যায়।
১১. সাবধান
ছেলেদের হারাম ভালোবাসায় আক্রান্ত হওয়ার রোগ প্রথমে অনুভবই হয় না। যখন শিকড় শক্ত হয়ে যায় তখন ধরা পড়ে; কিন্তু তখন ঐ সুশ্রী ছেলে হতে পৃথক হওয়া অতি কঠিন। এই রোগ মারেফাতের পথে বিশাল বাধা। 
১২. সুন্নাতই মারেফাত
আল্লাহ তা'আলার নৈকট্য বা ওলীত্বের এমন কোন স্তর নেই যেখানে পৌঁছার পর আর আমলের দরকার হয় না। যে যতটা নৈকট্য লাভ করবে তার প্রতিটি কাজ তত সুন্নাত অনুযায়ী হবে। 
১৩. প্রকৃত চোখওয়ালা
মজবুত ঈমান ও একীন যার রয়েছে, সে দুনিয়ার পতন এবং দুনিয়াদারদের ধন-দৌলত ও রাজকীয় শক্তির ওলট-পালট দেখতে পায়। যখন কবরের পাশ দিয়ে যায়, শান্তি ও শাস্তির যা কিছু ঘটছে তা সে অনুভব করে থাকে। 
১৪. শরিয়ত বিনা মারেফাত নেই
সর্বাবস্থায় আল্লাহ জাল্লা জালালুহুকে ভয় করে শরিয়তের ওপর চল। জাহেরী শরিয়তের সঠিক আমলের মাধ্যমেই আল্লাহ তা'আলার মারেফাত অর্জন হয়। 
১৫. চু-চেরাবিহীন মেনে চল
চিকিৎসা গ্রহণ করা তোমার কাজ, পরিচালনার দায়িত্ব চিকিৎসকের। শায়খের বাতানো পদ্ধতিতে আমল কর ও হালাত জানাও। এ আমলে কী ফায়দা হবে; আমার সমস্যা তো অন্য কিছু- জিন শয়তান বা মানুষ শয়তানের শেখানো এসব প্রশ্নের ধোঁকায় নিজেকে বরবাদ করো না।
১৬. ভিন্ন জগতের লোক
খুব কম লোকের আত্মাকেই আল্লাহপ্রেম, তাঁর দর্শন ও নৈকট্য লাভের শরাব পান করানো হয়। শুধু তাদেরই তকদীরলব্ধ বিপদাপদ ও দুঃখ-কষ্টের অনুভূতি থাকে না। ওপর দিয়ে দুর্দিন গড়িয়ে যায় কিন্তু তাদের খবরই থাকে না। তারা আল্লাহ পাকের শোকর  ও প্রশংসায় লিপ্ত থাকে। 
১৭. প্রেমিক হতে হলে...
সে ব্যক্তি কি করে প্রেমিক হতে পারে, যে লোক প্রেমাস্পদের নামে অভিযোগ করে এবং তাঁর ফয়সালা ও বণ্টন নিয়ে প্রশ্ন তোলে
১৮. শিরক থেকে সাবধান!
ধিক্ তোমাকে। তুমি নিজের সময় নষ্ট করে ইলম হাসিল করেছ; অথচ তার ওপর আমল করছ না। আল্লাহর দুশমনদের তুমি দাস হয়েছ এবং তাদেরকে আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণের মালিক-মোখতার ভেবে আল্লাহ তায়ালার শরিক বানিয়েছ। 
১৯. আল্লাহর ক্রোধ
যে ব্যক্তি মানুষের শ্রদ্ধার্জনের জন্য এমন সাজসজ্জা নিল যার যোগ্যতা তার নেই, তার ওপর আল্লাহ পাক ক্রোধান্বিত হন। 
২০. গুনাহগার গোলাম ক্ষমাকারী মনিব
সাবধান! যৎসামান্য ইবাদতের তাওফিক যা দান করা হচ্ছে তাতে যেন আত্মপ্রবঞ্চিত না হ‌ই। আমার ইবাদত তো দরবারে এলাহীতে পেশ করার যোগ্য‌ই না। কিন্তু তিনি ব্যতীত আর কোন মাওলা তো নেই। আমার সব অযোগ্যতা ক্ষমা করতেই তিনি ভালোবাসেন। আমি গুনাহগার গোলাম, তিনি ক্ষমাকারী মনিব।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

“সকাল বেলার ধনীরে তুই ফকির সন্ধ্যা বেলা”

দুরুদে সালাত শব্দ থাকা আবশ্যক সালামে থাকবে س ل م

দুটি রহস্যান্মোচন