মালফুজাত ০৭
০১. কলব হল মারকাজ
নবী রসুলগণ মানুষের কলব পরিশুদ্ধ করতেন; কেননা এটাই মারকাজ। মূলকেন্দ্র ঠিক হলে শাখা-প্রশাখা দুরস্ত হতে সময় লাগে না।
০২.রুহানী শক্তি আবশ্যক
প্রয়োজন পরিমাণ শক্তি-সামর্থ্য ব্যতীত শুধু আকাঙ্ক্ষা দিয়ে যেমন জাগতিক কোন
কাজ হয় না; তেমনি রুহানী শক্তি-সামর্থ্য না থাকলে
দীনের ওপর চলা যায় না।
০৩. বিপরীত
দুই হালাতের সহাবস্থানই ঈমান
খওফ ও খশিয়াত (ভয় ও শঙ্কা) এবং রজা ও
তামান্না (আশা ও আকাঙ্ক্ষা) সংমিশ্রণে তৈরি আল্লাহ প্রেমই ঈমান।
০৪. সোহবত জরুরি
তাসাউফ বা আত্মশুদ্ধি জ্ঞানগতভাবে অর্জনের
বিদ্যা নয়; বরং এ এমন এক যোগ্যতা যা অর্জন করতে হয়, পরিশুদ্ধ আত্মার সংস্পর্শ ও আমলের মাধ্যমে।
০৫. যে চিনেছে ...
যে আল্লাহ তা'আলাকে পরিপূর্ণ চিনেছে সে তার সর্বস্ব নিয়ে সর্বান্তকরণে আল্লাহ পাকের ইবাদতে
মশগুল হয়েছে।
০৬. কিছু থেকে বিরত থাকে
যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রেমিক, সে কেবল তাকে পেলেই রাজি হয়, অন্য কিছুতে নয়। সে শুধু তাঁরই সাহায্য
প্রার্থনা করে এবং তিনি ছাড়া সব কিছু থেকে বিরত থাকে।
০৭. তাঁর ভয়
তুমি যদি আল্লাহকে চিনতে, তাহলে তাকে নিয়ে ব্যস্ত থেকে রুজি খোঁজার ব্যাপারে উদাসীন হয়ে যেতে। তাঁর ভয়
তোমাকে রুজির তালাশ থেকে বিরত রাখত।
০৮. সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য
যে প্রেমিক আল্লাহ পাকের পরিচয় লাভ করেছে, আত্মিক চোখে রব্বুল আলামিনের কার্যপরিচালনা দেখতে শিখেছে- সে লাভ ক্ষতি, ভালো মন্দ যা কিছু আসে এতে দুনিয়ার কোন ব্যক্তি বা বস্তুর প্রশংসা বা নিন্দা
করে না। ব্যক্তিকে শুকরিয়া জানানোর সময় তার অন্তরে থাকে বস্তুত সকল প্রশংসা
আল্লাহর জন্য।
০৯. মাওলার ফয়সালা
জাহেলরাই দুনিয়ায় আনন্দিত হয়। যথার্থ আলেম
দুনিয়ায় থাকে দুর্ভাবনাগ্রস্ত। অজ্ঞরা তাকদীর নিয়ে ঝগড়ায় লিপ্ত হয়, জ্ঞানীরা তা মেনে নিয়ে মাওলার ফয়সালার ওপর রাজি খুশি থাকে।
১০. সচেতন কে?
যে ব্যক্তি খোদাপ্রেমিকদের সাথে বেশি ওঠা-বসা করে, সে নিজ নফস সম্পর্কে সচেতন হয় এবং নিজ প্রতিপালকের সামনে অধিকতর বিনয়াবনত
হয়।
১১. স্থায়ী শান্তি
প্রকৃত ও
স্থায়ী শান্তির একমাত্র মাধ্যম সব ছেড়ে আল্লাহর দরবারে ফিরে আসা। ফিরে আসার
পদ্ধতি হল- সর্বান্তকরণে গুনাহ বর্জন করা, তওবা-ইস্তেগফার করতে থাকা, ইবাদতে মনোনিবেশ করা।
১২. আখেরাতের জন্য
হে উদাসীন!
সাবধান হও। তোমাকে দুনিয়ার জন্য সৃষ্টি করা হয়নি। তোমাকে সৃষ্টি করা হয়েছে
আখেরাতের জন্য।
১৩. দারিদ্র্যে স্বাদ পাওয়ার সৌভাগ্য
যে ব্যক্তি আল্লাহ পাকের প্রেমিক, তার কাছে দারিদ্র্যের তিক্ততা মিষ্টি হয়ে দেখা দেয়। তাই পার্থিব দারিদ্র্য তার
সাথে লেগে থাকে এবং সে তা নিয়েই তুষ্ট ও তৃপ্ত। দারিদ্র্যে স্বাদ পাওয়ার সৌভাগ্য
সে অর্জন করেছে। দারিদ্র্যেই সে স্বচ্ছলতা ও স্বাচ্ছন্দ্য ভোগ করে।
১৪. একমাত্র আল্লাহর জন্য কর
যা কিছু আল্লাহ পাকের জন্য হয়- তা পূর্ণত্বে পৌঁছে, স্থায়িত্ব পায় এবং ধাপে ধাপে উন্নত হতে থাকে। পক্ষান্তরে যা কিছু গাইরুল্লাহর
জন্য হয়- তা পরিবর্তিত হয়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়।
১৫. সোহবতের জন্য আদব শর্ত
আল্লাহওয়ালার মুখ থেকেই ইলম হাসিল হয়। তাঁদের সামনে আদবের সাথে বস। কোন
প্রশ্ন তুলো না, পার্থিব স্বার্থ চেও না। তাহলে তাঁর ইলমের
ফয়েজ লাভ করবে। তোমার ইলমে বরকত দেখা দিবে।
১৬. সব প্রকাশ করতে নেই
"আল্লাহপ্রেমিকের জন্য বাহ্যিক বিপদাপদ আর
নবীপ্রেমিকের জন্য দরিদ্রতা আসমানী হাদিয়া।" মাশুকের হাদিয়া যখন আসে
নাবালেকদের বুঝতে না দিয়ে তা গ্রহণ করতে হয়।
১৭. মাওলার ফয়সালার ওপর রাজি
জাহেলরাই দুনিয়ায় আনন্দিত হয়। যথার্থ আলেম দুনিয়ায় থাকে দুর্ভাবনাগ্রস্ত।
অজ্ঞরা তাকদীর নিয়ে ঝগড়ায় লিপ্ত হয়, জ্ঞানীরা তা মেনে নিয়ে মাওলার ফয়সালার ওপর
রাজি খুশি থাকে।
১৮. নফসকে হত্যা কর
নফস হল আল্লাহ ও মানুষের মধ্যকার অন্তরায়। তাই মাঝখান থেকে নফস বিদায় নিলে
খোদা ও বান্দার মাঝে কোন অন্তরায় থাকে না।
১৯. কবরকে ভুলে থেক না
মাটির উপর পদচারণাকারী হে দাম্ভিক! ভাঙ্গা কবরগুলোর দিকে তাকিয়ে দেখ। ঈমানের
ভাষায় তাদের সাথে কথা বল। তাদের ওপর বয়ে যাওয়া সব বিপদের কথাই তারা বলবে।
২০. শরিয়ত বাদে তরিকত নেই
মুরিদ শরিয়তের ব্যাপারে উদাসীন থাকতেই তাকে আল্লাহ পাকের ভালোবাসা শেখানো শুরু
করা পীর সাহেবের জন্য ঠিক নয়; এতে যেসব ক্ষতি হয় তার কয়েকটি
·
"সে প্রকৃত অর্থে আল্লাহ পাকের হুকুম মানতে অক্ষম" তা ভুলে যায়।
·
"আমিত্ব" বের করা কঠিন হয়ে পড়ে।
·
"অন্যের
ত্রুটি" দেখার বদ অভ্যাস তৈরি হয়।
·
"নিজেকে
বুজুর্গ" ভাবতে শুরু করে।
·
"তাসাউফের
গুরুত্ব" অনুধাবন করতে পারে না।
·
"শায়খের পূর্ণ
অনুগত" হওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।
·
"ইলমে ফিকহের আহাম্মিয়্যাত" দিল থেকে বের হয়ে যায়।
বহুত ভাল কথা আছে
উত্তরমুছুন