সালাত ওয়া সালাম ফরজ : এর সাতটি ব্যাখ্যা

সালাত ওয়া সালাম ফরজ

এর সাতটি ব্যাখ্যা

 } জীবনে একবার ফরজ। কালিমায়ে তাইয়্যেবার মতো।লিমায়ে তাইয়্যেবাও জীবনে একবার ফরজ কেননা আমরে মুতলাক- যে হুকুম কোন নির্দিষ্ট-উপলক্ষ-নির্ধারণ ব্যতীত দেওয়া হয় -তা তাকরারের তাকাযা করে না- বারংবার আদায়ের দাবি সে হুকুমের অন্তর্ভুক্ত হয় না। একবার আদায়ের দ্বারাই হুকুম পালন হয়ে যায়। এটাই জমহুর-অধিকাংশ ওলামার মত। ইমাম আবু হানিফা ও ইমাম মালেক রহ.ও এমতই দিয়েছেন।

খ} শুধু নামাজের শেষ বৈঠকে ফরজ।

গ} প্রত্যেক নামাজে ফরজ। হাম্বলী মাযহাবের কিছু ইমামের তে সালাত ও সালাম নামাজের শুরুতে পাঠ্য দোয়াসমূহের একটি। প্রত্যেক নামাজে ফরজ দ্বারা এ মতটিকেই বোঝানো হয়েছে।

ঘ} কোন সংখ্যা বা সময় নির্ধারণ ব্যতীত অধিক পাঠ করা ফরজ। এ মতটি দিয়েছেন কাজী আবু বকর বিন বুকাইর রহ.

ঙ} প্রত্যেক মজলিসে যেখানে রসুল পাক সাল্লাল্লাহু লাইহি ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লামের আলোচনা হয় একবার ফরজ। যদিও তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়ালিহি ওয়াসাল্লামের আলোচনা বারবারও হয়। ওয়াজিব একবারই।

}  প্রত্যেক দোয়ায়-মুনাজাতে ফরজ।

}  খনই নবীজী সাল্লাল্লাহু লাইহি ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লামের আলোচনা করবে বা শুনবে, প্রতিবার দুরুদ পাঠানো/ পাঠকরা ফরজ। এটি ইমাম তহাবী  রহ.সহ কয়েকজন হানাফী আলেমের মত। তাদের বক্তব্য হল, যে কোন কারণে যেভাবেই নবীয়ে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লামের নাম মোবারক কেউ উচ্চারণ করবে বা শুনবে তার ওপরই দুরুদ পাঠ ফরজ হয়ে যাবে। শাফেয়ী মাহাবের কয়েকজন ইমামও তই গ্রহণ করেছেন। মালেকী ও হাম্বলী মাযহাবেও কয়েকজন এ মতের পক্ষে রযেছেন। এ মতের পক্ষের ওলামায়ে কেরাম এ মত গ্রহণের ক্ষেত্রে সেসব  হাদীসকে উপজীব্য বিবেচনা করেছেন, যেসব হাদীসে দুরুদ শরীফ ত্যাগ করার ব্যাপারে কঠিন ধমক ও শাস্তির কথা রয়েছে। মতটি যদিও ইজমার অনুরূপ নয়; তবে ইশক ও ফজিলতের রূপ এটিই। রূহুল মাআনীর মুসান্নেফ রহ-এর আগ্রহও এ মতটির প্রতিই বোঝা যায়। [অধম অনুবাদক মসজিদে নববী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লামে বসে এ অংশটি অনুবাদের সময় মনে করছে, জাদে শাফাআতের মুসান্নে মুহতারাম মাওলানা মাসউদ আহার দামাত বারকাতুহুম এর ঝোঁকও  এ মটির প্রতিই। অনুবাদকের যদি ইশকওয়ালা দিল থাকত সেও এ মতের প্রতিই বিশেষ আগ্রহী হত। কিন্তু আফসোস! পাথরে যতই বৃষ্টি হোক- পাথর পাথরই রয়ে যায়।]

সালাত ও সালাম ফরজ মর্মে ওলামায়ে কেরামের অধিকাংশেরই মত, প্রতিটি মুসলমানের ওপর জীবনে একবার ফরজে আইন। তবে ফরজে কেফায়া বলেছেন এমনও দু’-চারজন রয়েছেন।

এক বৈঠকে যদি বারবার নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লামের আলোচনা আসে, তাহলে একবার না বারবার...? হেদায়া কিতাবের- একাধিক ব্যাখ্যাগ্রন্থে রয়েছে, বিশুদ্ধ তানুযায়ী একবারই ফরজ। তবে আলমুজতাবা-এর লেখক বলেন,  প্রতিবাফরজ।

বাকি থাকল নামাজের প্রসঙ্গটি। এ প্রসঙ্গে ইমাম  শাফেয়ী রহ. বলেন,  তাশাহুদের পর সালামে পূর্বে দুরুদ শরীফ পাঠ করা ওয়াজিব। দুরুদ শরীফ ব্যতীত নামাজই সহিহ হবে না। কেউ কেউ আবার ইমাম শাফেয়ী রহ.-এর এ বক্তব্যটিকে “শায” (তাঁর পক্ষ থেকে এমন থা দুষ্প্রাপ্য ) বলার চেষ্টা করেছেন। এবং মতটিকে অগ্রহণীয় বলতে চেয়েছেন। বাস্তব হল,  ইমাম শাফেয়ী রহ-এর এ মতটি “শায” নয়। কিছু সাহাবায়ে কেরাম, তাবেঈন ও আহলে ইলমের মত এটাই। ইমাম শাফেয়ী রহ. তাঁর কিতাব کتاب الام আপন মতের পক্ষে দলিলও উপস্থাপন করেছেন। মনে রাখতে হবে- এমন মহান একজন ইমামের ব্যাপারে পরিপূর্ণ যাচাই ব্যতীত অন্যরকম মন্তব্য করা অত্যন্ত জঘন্য কাজ। 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

“সকাল বেলার ধনীরে তুই ফকির সন্ধ্যা বেলা”

দুরুদে সালাত শব্দ থাকা আবশ্যক সালামে থাকবে س ل م

দুটি রহস্যান্মোচন