মুহতারাম ওলামায়ে কেরাম! একটু ভাবুন
মুহতারাম ওলামায়ে কেরাম!
একটু ভাবুন
سلام على النبي صلى الله عليه و سلم-এর পূর্ণ ব্যাখ্যার উদ্দেশ্যে হজরত ওলামায়ে কেরামের খেদমতে প্রারম্ভিকা বা ভূমিকা হিসেবে কয়েকটি কথা।
১. আল্লাহ
তায়ালা আমাদেরকে সালাতেরও হুকুম করেছেন সালামেরও। “صلوا عليه و سلموا تسليما”।
২. এই
হুকুম নামাজের ভিতর-বাহির উভয় ক্ষেত্রের জন্যই।
৩. সাহাবায়ে
কেরাম রাদি. প্রথমে সালাম শিখেছেন [বুখারী শরিফের বর্ণনামতে] অতঃপর নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে সালাতের পদ্ধতি শিক্ষা দিয়েছেন; যেটিকে আমরা দুরুদে ইবরাহিমী বলি।
৪. সালামের যে শব্দ-বাক্য রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লাম শিখিয়েছেন এবং তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লামের ইন্তেকালের পর হজরত ওমর রাদি. মিম্বর থেকে শিখিয়েছেন তা হল,
“السلام عليك ايها
النبي ورحمة الله و بركاته”
৫. সালামে
থাকা সম্বোধনপদ عليك নিয়ে
যদি কারো কোনো “এশকাল” থাকে অথবা এ ব্যাপারে মনে সংশয়-সন্দেহ কাজ করে তাহলে সেটা নামাজে আরো অধিক হওয়া উচিত। কারণ নামাজ তো একমাত্র আল্লাহ তায়ালার প্রতি পরিপূর্ণ মনোসংযোগ স্থাপন এবং একান্ত মনে আল্লাহ তায়ালার তাওহীদ-একাত্মবাদ প্রকাশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থান। যেমনটি ইরশাদ হয়েছে, “واقم الصلاة لذكرى” ।
৬. যেহেতু
নামাজে এই সম্বোধন পদ নিয়ে কোন এশকাল নেই; তাহলে নামাজের বাইরে এটা বিদআত হয়ে যায় কীভাবে? কী কারণে?
৭. হুজুর
আকদাস সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লামের প্রতি “সালাত”-এর যতগুলি সহিহ রেওয়ায়েত আছে তার কোনটাতেই ছিগায়ে সালাম ইনশা তথা سَلَّمَ- سَلِّمَ -এর
উল্লেখ নেই। বরং এই দুটি সিগাহ সহজতা ও ব্যবহারের পরম্পরায় উম্মতের মধ্যে চালু হয়ে গৃহীত হয়ে গিয়েছে। যেমন صلى الله عليه و سلم মূলত ছিগায়ে খবর বা জুমলায়ে খবরই মাসনুন। যথা : “السلام عليك ايها النبي و رحمة الله و بركاته” অথবা যেমন মসজিদে প্রবেশের সময় “و السلام على رسول الله”
অতএব সম্মানিত ওলামায়ে কেরাম আপনারাই একটু ভেবে চিন্তে বলুন, হাদিসে বর্ণিত এই মাসনুন ছিগার দাওয়াত এটা কি সুন্নতের দাওয়াত না বিদআতের?
৮. উম্মতের
একটি বড় অংশ সালামের জন্য নিজেদের মনমতো বিভিন্ন রকম শব্দ ও বাক্য তৈরি করে নিয়েছে এবং হাজার রকম উপলক্ষ আবিষ্কার করে সেসব মনগড়া সালামের ব্যাপক প্রচার চালাচ্ছে। অথচ হাদিসে বর্ণিত মাসনুন “সালাম” একেবারেই ছেড়ে দিয়েছে। এমতাবস্থায় সালামের মূল বাক্য ও সেটার অর্থ-মর্মের ব্যাপক প্রচার-প্রসার আমল অতি জরুরি হয়ে পড়েছে।
৯. “সালাম”
দ্বারা মুহাব্বত বৃদ্ধি পায়। আর রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লামের মুহাব্বত অর্জন এটাই তো জীবনের বড় মাতলুব ও মাকসুদ। লক্ষ্য ও কাম্য বিষয়।
১০. وسلموا تسليما –আয়াতে কারিমায় প্রদত্ত এই হুকুমটির ওপর আমলের জন্য রওজায়ে আকদাসে হাজিরি ও রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লামের আলোচনার সময় السلام عليك ايها النبي و رحمة الله و بركاته বলা দ্বারাই আমল পুরা হয়ে যায়। আর আল্লাহ তায়ালা ব্যতীত কাউকে সব জায়গায় হাজির-নাজির মনে করা কোনভাবেই জায়েজ নেই।
জাজাকাল্লাহ খাইরান মুহতারাম হযরত।
উত্তরমুছুন