ওলামায়ে কেরামের খেদমতে
ওলামায়ে কেরামের খেদমতে
আল্লাহ তায়ালা হজরত আকদাস মাওলানা সাঈদ আহমদ পালনপুরী রহ.-কে মাগফিরাত করুন এবং সম্মানের উচ্চ আসনে সমাসীন করুন। হজরতের তুহফাতুল আলমায়ী থেকে একটি উদ্ধৃতি (সংক্ষিপ্ত) পাঠ করুন। “সুরায়ে
আহযাবের ৫৬নং আয়াতের তাফসিরে ওলামায়ে কেরাম বলেছেন, প্রত্যেকের ওপর জীবনে অন্তত একবার সালাত ও সালাম পাঠ করা ফরজ। অধিক পরিমাণে সালাত ও সালাম পাঠ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। সালাত ও সালামকে নামাজের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রতি নামাজে বারবার হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর দুরুদ ও সালাম পাঠ করা হয়। সালাত ও সালামের গুরুত্ব অনুধাবনে এটা উত্তম দৃষ্টান্ত। এ ব্যাপারে হজরত শাহ ওয়ালী উল্লাহ কুদ্দিসা সিররুহুর কথা প্রণিধানযোগ্য।
তিনি বলেন, কুরআন মাজিদ আল্লাহ তায়ালার কালাম। এর শান বুলন্দ করা-সুউচ্চ সম্মান প্রকাশ ও প্রদর্শন ছিল আবশ্যক। কুরআনুল কারীমের এই সম্মান প্রকাশের জন্য নামাজের চেয়ে উত্তম আর কোন স্থান হতে পারে না। তাইতো নামাজে কুরআনে পাকের তেলোওয়াতকে ফরজ করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা আদেশ করেছেন “وسلموا تسليما”
আয়াতের এ দুটি শব্দের প্রথমটি আদেশবাচক ক্রিয়া এবং দ্বিতীয়টি উক্ত ক্রিয়াটি পালনে বিশেষ গুরুত্বপ্রদান দাবি করে। আমরা যখন পড়ি السلام عليك ايها الني এতটুকু দ্বারা سلموا অর্থাৎ
প্রথম শব্দ আদেশবাচক ক্রিয়ার ওপর আমল হয়। এরপর ورحمة الله و بركاته পড়ার দ্বারা দ্বিতীয় শব্দ تسليما এর
ওপরও আমল হয়ে যায়।
রসুল কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লামের ইন্তেকালের পর কেউ তাশাহুদে পরিবর্তন করেছিল। তারা السلام عليك ايها النبي এর পরিবর্তে السلام على النبي পড়তেন।
তাদের যুক্তি ছিল “عليك”
মধ্যম পুরুষ সম্বোধন পদ। যা উপস্থিত ব্যক্তির জন্য ব্যবহার করা উচিত। তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লাম যেহেতু পর্দা ফরমাইয়াছেন তাই সম্বোধন পদ জাতীয় শব্দ ব্যবহার বাদ দেওয়াই যুক্তিসংগত। কিন্ত তাদের এই পরিবর্তন উম্মত কবুল করে নাই। কবুল না করার দুইটি কারণ :
এক. হুজুর
সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবদ্দশায় যে মহিলারা বাসায় নামাজ পড়তেন বা যেসব পুরুষ মসজিদে নববী ব্যতীত অন্য মসজিদে নামাজ পড়তেন সেখানে তো তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লাম উপস্থিত থাকতেন না ।
এসত্ত্বেও তারা সকলেই সম্বোধন পদ السلام عليك পড়তেন।
দুই. এটা
মূলত বর্ণনামূলক বাক্য। অর্থাৎ শবে মেরাজের স্মৃতিচারণ। এরূপ বর্ণনা তথা উদ্ধৃতিমূলক বাক্য
যা ছিল হুবহু তাই রাখতে হবে। যেমন قُلْ هُوَ الله اَحَدٌ এখানে قُلْ শব্দে
সম্বোধিতসত্তা হচ্ছেন হুজুর আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তিনি
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহি ওয়াসাল্লাম দুনিয়াতে উপস্থিত থাকতে যেমন পড়তে হয়েছে
এখন পর্দা ফরমানোর পরেও قل পড়া আবশ্যক। এটাকে
বাদ দেওয়া জায়েজ নেই। কারণ আমরা যখন তেলোওয়াত করি তখন সম্বোধন উদ্দেশ্য হয় না।
আমরা পড়ি বর্ণনা বা উদ্ধৃতিমূলক হিসেবে। আলেমদের পরিভাষায় যেটাকে কালিমায়ে হেকায়ী
বলে। আল্লাহ তায়ালাই সর্ব বিষয়ে অবগত।”
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন