বোন নুহা! আপনাকে বলছি...

দুইটা বাচ্চার জ্বালায় অতিষ্ঠ নুহা। ৫ ও ২ বছরের দুটো সন্তানের অত্যাচারে নুহা কেন, যে কোন মায়েরই বিরক্ত হবার কথা। সংসারের টানাপোড়ন যেন কয়লায় ফুঁক দেয়। স্বামী বাইরে থাকার দীর্ঘ সময়টা একাকী বিষিয়ে ওঠে। ভাবে, একজন সাহায্যকারিণী থাকলে বোধহয় এতটা অধৈর্য হত না। কিন্তু সাধ আর সাধ্য তো এক মেরুতে চলে না।
সহ্য সীমা ছাড়িয়ে গেলে হাত পিঠে যায়। হাতে পাখা-চামচ ইত্যাদি কিছু থাকলে তা-ই। শিশু দু’টো কাঁদে। ভীতি মানুষকে দৌড়ে বেড়ায়। শিশুদেরও। সবটুকু শক্তি দিয়ে দেয় দৌড়। বিছানার ওপারে। শিশু মন কী যেন ভাবে? ফোঁটা ফোঁটা পানির সাথে ভাবনাটা গলে যায়। বাবা আসার আগেই। কিছুক্ষণ অসহায় মনে করে নিজেকে। শিশুদের ঐ “মনে করা” ভাববার সুযোগ কই আমাদের? এমনি ঠিক হয়ে যাবে। আবার আসবে মায়ের কোলেই।
আমরা না ভাবলেও শিশুরা ঐ “মনে করাটা” খুব অনুভব করে। এ অনুভূতিটা নিজেকে অসহায়, অধীন, করুণার পাত্র ভাবতে শেখায়। ধীরে ধীরে এ মানসিকতা নিয়েই শিশু বেড়ে ওঠে। যে অপার সম্ভাবনাসহ আল্লাহ আমার কাছে এ মানবটি আমানত দিয়েছিলেন; সে সম্ভাবনা, বড় হবার প্রবল আগ্রহ, আকাশ ফুঁড়ে বিশ্বটাকে দেখার, পতাল ফুঁড়ে নামার অদম্য শক্তিটা আমি নিজ হাতেই হত্যা করি।          
বোন নুহা! আপনাকে মনে রাখতে হবে, আপনি মা। মাতৃত্বের এতবড় মর্যাদা -গায়ের চামড়ায় বানানো জুতোও যেখানে তুচ্ছ- আপনাকে এমনিই দেয়া হয়নি। যেমন সম্মান তেমনি ধৈর্য, সহ্য, সবর, শোকরও আপনার থাকতে হবে।
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “শিশুর বয়স সাত বছর হলে তাকে নামাজের আদেশ দাও আর দশ বছর হলে (যদি সে নামাজে অলসতা করে, শাসন কর। প্রয়োজনে) তাকে প্রহার কর।” সাত বছরে নামাজ পড়াতে এর পূর্বে তাকে শিখাতে হবে। তাহলে সাতের কম বয়সেই শিশুরা শিক্ষাগ্রহণ করতে সক্ষম। ওদিকে তার ওপর নামাজ ফরজ হবে অন্তত বার বছর বয়সে। 
প্রহারের হুকুম দেয়া হল দশ বছর বয়সে। যা শিক্ষা দেয়া বা ফরজ আদায় না করা; কোনটার সাথেই সম্পৃক্ত নয়। এ হাদিস থেকে আমি বলতে চাই- দশ বছর বয়সের পূর্বে কোন শিশুকে প্রহার করার অধিকার শরিয়ত দেয়নি। ঈমানের পর সবচেয়ে বড় হুকুম নামাজের জন্যও যেহেতু মারা যাবে না। অতএব, অন্য কোন কারণেই দশ বছর পূর্ণ হওয়ার আগে শিশুকে মারা যাবে না।
ধৈর্য, সহ্য, সবর, শোকর আপনার প্রাণপিয় সন্তানের মানসিক বিকাশের জন্য অপরিহার্য। যদি অধৈর্য হয়ে যান, বে-সবর হয়ে যান; মাতৃত্বের সম্মান পাওয়ার যোগ্যতা আপনি হারিয়ে ফেললেন। নিজ হাতে কলজে ছেঁড়া ধনকে বামন করে দিলেন।
(নুহা অর্থ বিচক্ষণ, বুদ্ধিমতী। এ অর্থে নামটি ব্যবহার করা হয়েছে। কাকতালীয়ভাবে কারো জীবনের সাথে মিলে গেলে আমরা ক্ষমাপ্রাথী।)

মন্তব্যসমূহ

  1. আসসালামু আলাইকুম
    হযরত আমার মাহরাম একজন বোনের বিবাহ হচ্ছে না তার জন্য ভালো বিবাহর একটা আমল দিলে ভালো হতো।

    উত্তরমুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

“সকাল বেলার ধনীরে তুই ফকির সন্ধ্যা বেলা”

দুরুদে সালাত শব্দ থাকা আবশ্যক সালামে থাকবে س ل م

দুটি রহস্যান্মোচন